বাংলাদেশে আইসিস তৎপরতা ও পশ্চিমা বিশ্বের ‘নির্ভরযোগ্য’ তথ্যসূত্র
এই লেখাটি যখন লিখতে বসেছি, তার কিছুক্ষণ আগে বারাক ওবামার কাছ থেকে ঘোষণা এসেছে, ‘আইসিসকে দমন করতে বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে।’ এতোদিন বিশ্ববাসী আইসিস এর কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়েছেন। এখন এর কার্যকারীতা দেখার সুযোগও ঘটবে। বস্তুত ওবামা সরাসরি না বললেও, আসাদের প্রতি এই হুমকি অনেকদিন ধরেই বলবৎ আছে। তিনি শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন।
বারাক ওবামা
ওবামা বুশের চেয়েও ভদ্রলোক। সভ্য মানুষ। এই সভ্যতার উচ্চতাকে মাপার একটি পন্থা হচ্ছে, স্বার্থ সিদ্ধির জন্য, পৃথিবীব্যাপী হত্যাকান্ড চালাতে ক্ষমতাধর মানুষেরা কত যুক্তিগ্রাহ্য কারণ সৃষ্টি করতে পারছেন তার উপর। মধ্যযুগ সবেমাত্র গত হয়েছে। কানকে ঘুরিয়ে নাক ধরার চক্রান্তের স্বার্থকতার উপরই দাঁড়িয়ে আছে চলমান সভ্যতা।
বাংলাদেশে পৃথিবীব্যাপী এই হানাহানির প্রেক্ষাপট খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে একারণে যে, এটা সৃষ্টির একটি টুলস সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশে আইসিস সক্রিয়। সম্প্রতি ঢাকার কুটনীতিক পাড়ায় ইতালী নাগনিক খুন হওয়ায়, বিশ্ব গণমাধ্যমসহ বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোতেও একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। যার একমাত্র তথ্যসুত্র হচ্ছে, রিতা খাজ পরিচালিত সার্চ ফর ইন্টারন্যাশনাল টেররিস্ট এনটিটি’স (সাইট) ইন্সটিটিউট এর ওয়েব সাইট।
আশা করেছিলাম, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন সংবাদের তথ্যসূত্রের প্রাসঙ্গিকতা ও যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন। কিন্তু এই বিষয়ে তাঁদের আশ্চর্য নিরাবতা- সেকুল্যারিজম চর্চার প্রতি বিপথগামী আকাঙ্খা না তাদের অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ, আমার কাছে স্পষ্ট নয়। সুতারং কিবোর্ড হাতে তুলে নিলাম।
কে এই রিটা খাজ ?
বেশিদূর যেতে হবে না। উইকিপিডিয়াতেই রিতা খাজকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেলের পাশাপাশি অনেক আর্টিকেলের লিংক রয়েছে। সেখান থেকে জানতে পারছি, রিতা খাজ এমন এক ইরাকি বংশোদ্ভুত ইহুদি, যিনি শৈশবে তার বাবাকে হারিয়েছিলেন খুব দুঃখজনক ঘটনার মধ্য দিয়ে। রিতার বাবাকে সাদ্দাম হোসেনের শাসন আমলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর দরুন গ্রেফতার করা হয় ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষের সামনে হত্যা করা হয়। রিতার মা তার তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে ইসরাইলে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন। ইসরাইয়ে থাকাকালীন সময়ে রিতা তেল আবিব ইউনিভার্সিটিতে পড়ার পাশাপাশি ইসরাইলের ডিফেন্স ফোর্সে চাকুরী করতেন। ১৯৯৭ সালে স্বামীর চাকরী সূত্রে আমেরিকা আসার আগে তিনি ইসরাইল ছাড়ার ব্যাপারে খুবই দ্বিধাগ্রস্থ ছিলেন। তিনি মনে করন, প্রত্যেক ইহুদীকেই ইসরাইলকে ধারণ করা উচিত।
সাইট ইন্সটিটিউট
রিটা খাজের সাইট ইন্সটিটিউট হচ্ছে এমন একটি প্রাইভেট অর্গানাইজেশন, যারা অন লাইনে ইসলামি জঙ্গী সংগঠনগুলোর কার্যক্রমকে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। এই সংক্রান্ত এনালিটিক্স, জিহাদী হুমকী ও জিহাদী ফোরামের প্রতি নজরদারী, ডিপ ওয়েব জিহাদী এক্টিভিটিজ গুলো পর্যালোচনার মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যগুলোকে তাদের ক্লায়েন্টের কাছে অতি উচ্চমূল্যে বিক্রি করে থাকে। পশ্চিমা বিশ্বের জিহাদী তৎপরতার খবরাখবরের বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও একাডেমিক পর্যায়ে বেশ চাহিদা আছে বলেই মনে হয়। যদিও এই সমস্ত তথ্যের উৎস সম্পর্কে কোন পরিস্কার ধারনা কারো নেই। তবু কিভাবে কিভাবে জানি, পশ্চিমা সরকারসহ মিডিয়া সমূহ কোন প্রশ্নব্যাতীত রিটা খাজের এই তথ্যগুলোকে গ্রহণযোগ্য ও অথেনটিক মনে করে থাকেন। তবে সর্বাধিক প্রচলিত মতামত হচ্ছে, সাইটে প্রকাশিত সকল তথ্যই ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কর্তৃক সরবরাহকৃত।
বিতর্ক
রিটা খাজ সারা পৃথিবীতে আলোচনায় এসেছেন কিছু বিতর্কিত ভিডিও টেপ প্রকাশের মাধ্যমে। এর অধিকাংশই আল কায়েদা ও আইসিস এর কর্মকান্ডের। এই লেখাটি যেহেতু আইসিস সংক্রান্ত, তাই আমি আল কায়েদার প্রসঙ্গে না গিয়ে আইসিস বিষয়ে সাইট কর্তৃক প্রকাশিত বিতর্কিত ভিডিও টেপগুলোর কয়েকটির মধ্যে আমার আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখব।
রিটা খাজের সাইট ইন্সটিটিউট ২০০৮ সাল থেকে আইসিসের অনেকগুলো ভিডিও টেপ প্রকাশ করে, যেগুলোতে দেখা যায় আইসিস সদস্যরা বারাক ওমাবার প্রতি কিছু বানী প্রদর্শন পূর্বক James Foley, Stephen Sotloff, David Haines, Alan Henning, Peter Kassig ইত্যাদি সিআইএ এজেন্ট/ আমেরিকান সাংবাদিকদের গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করছে। সবগুলো ভিডিও টেপ একই ধরনের, সুনির্মিত, হরর ইফেক্টে ভরপুর। এমন একটি ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
চলচ্চিত্র নির্মাণের কৌশলে নির্মিত এই সমস্ত ভিডিও টেপগুলোর নির্মাণ শৈলী মুগ্ধ হবার মতো। প্রয়োজনীয় জায়গায় ফেড ইন, ফেড আউট ইফেক্ট, হত্যার আসল অংশটি এড়িয়ে যাওয়া, প্রয়োজনীয় ট্রাক শট, ম্যাক্সিমাম হরর ইফেক্ট ইত্যাদি বিষয়গুলো এই ভিডিও টেপগুলোর সত্যতা সম্পর্কে সারা পৃথিবীতেই বিতর্ক তৈরি করেছে। আর এই যুগে ফটোশপের সামান্য জ্ঞান নিয়েই এই ধরনের ভিডিও প্রস্তুতের
FB LIke Bottom
Wednesday, October 7, 2015
বাংলাদেশে অাইসিস তৎপরতা ওপশ্চিমা বিশ্বের নিভর্রযোগ্য।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment