দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেই ' ধর্ষক 'নেতাকে ছেড়ে দিল পুলিশ আপসের জন্য চাপ ।"
চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে গণপিটুনি দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যে নেতাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল , তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ । এমনকি ওই নেতার ' ক্ষমতার চাপে ' মামলা করা তো দূরের কথা , ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর পরিবারকে বিষয়টি আপস করে ফেলতে মুচ লেকাও দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । অভিযুক্ত ' ধর্ষক ' আক্তার হোসেন পার্বতীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি । গত বুধবার তাঁকে পিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল ওই ছাত্রীর স্বজন ও এলাকাবাসী । কিন্তু ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি পুলিশের হাত থেকে বেরিয়ে যান । জানা গেছে , ' ধর্ষক ' আক্তার হোসেনকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পার্বতীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ১ নম্বর বেলাইচণ্ডীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ রাজাসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা । এ সময় ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক ছাড়া তাদের পক্ষে আত্মীয়স্বজন কাউকে উপস্থিত থাকতে দেওয়া হয়নি । নেতাদের চাপে আপসের শর্তের মুচ লেকায় সই করে উভয় পক্ষ । ওই ছাত্রীর বড় ভাই বলেন , ' আক্তার হোসেন আমার মায়ের পক্ষের রক্ত সম্পর্কিত বড় ভাই । তার দোকানে প্রায় এক যুগ কাজ করেছি । একমাত্র ছোট বোন চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছে । তাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে আক্তার । আবাদি জমি এবং সুদের ওপর টাকা নিয়ে তাকে দিয়েছেন আমার বাবা । মা আপত্তি তোলায় বলেছিল , মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনকে টাকা না দিলে চাকরি হবে না । এ ছাড়া চাকরির ছোটাছুটির জন্য খরচ বাবদ আরো ১৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে । ' তিনি আরো বলেন , ' দিনাজপুর পুলিশ লাইনে আমার বোন ইন্টারভিউ দিয়েছিল । মেডিক্যাল করা হয়েছিল , হাতের ছাপ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু শেষ পর্যন্ত চাকরি হয়নি । ওই টাকা ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন রাজা চেয়ারম্যান । বোনের ক্ষতির বিষয়টি কিভাবে পূরণ করবে তা নেতাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি । আমরা তো এখন নিঃস্বন। এ ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ রাজার দুটি মোবাইল ফোন নম্বরে কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি । পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক মাহমুদুল আলম জানান , স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষ আপসের শর্তে মুচ লেকা দেওয়ায় আক্তার হোসেনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেনি ওই ছাত্রীর পরিবার । তারা নিজেরা বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য সময় নিয়েছে । তবে সমঝোতায় সন্তুষ্ট না হলে তারা যেকোনো দিন মামলা করতে পারবে । মামলা করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ ।প্রসঙ্গত , পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ওই কলেজ ছাত্রীকে কৌশলে অন্যত্র নিয়ে ধর্ষণ এবং সাড়ে তিন লাখের মতো টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে । এ অভিযোগে গত বুধবার আক্তারকে জুতাপেটাসহ গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ওই ছাত্রীর স্বজন ও এলাকাবাসী । এ নিয়ে গতকাল কালের কণ্ঠ'র দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ' চাকরি দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে ধর্ষণ ? ' শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ।
FB LIke Bottom
Sunday, October 18, 2015
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেই ' ধর্ষক 'নেতাকে ছেড়ে দিল পুলিশ আপসের জন্য চাপ ।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment