FB LIke Bottom

Monday, October 19, 2015

বাংলাদেশ আওয়া.মীলীগের প্রধান মূলনীতিসমূহ

বাংলাদেশ আওয়া.মীলীগের প্রধান মূলনীতিসমূহ
জনগণের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক দিকের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ সাধন করাই গণতান্ত্রিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য। এ উদ্দেশ্যে, আমেরিকা, ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্য, ভারত এবং আয়ারল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কতকগুলো মৌলিক নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নীতিগুলো হচ্ছে রাষ্ট্র শাসনের মূলমন্ত্র। যেকোন সরকারের কর্তব্য হলো রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে এগুলোকে বাস্তবায়ন করা।
অনুরূপভাবে, বাংলাদেশের সংবিধানেও কতকগুলো রাষ্ট্রীয় মৌলিক নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মহান সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে যে, “যে সকল মহান আদর্শ বা চেতনা আমাদের বীর বাঙালি জাতিকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদেরকে প্রাণোৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল তা হল- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতা এ মহান সংবিধানের মূলনীতি হবে”। ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে ৮নং অনুচ্ছেদ থেকে ২৫নং অনুচ্ছেদ পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল অনুপ্রেরণা, এ চারটি নীতি ও আদর্শকেই তাদের দলীয় প্রধান মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। নীচে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রধান চারটি মূলনীতি আলোচনা করা হলঃ
১. জাতীয়তাবাদ (Nationalism): বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের এবং আমাদের মহান সংবিধানের প্রধান চারটি স্তম্ভের মধ্যে একটি অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে জাতীয়তাবাদ। অভিন্ন ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে একই ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে লালিত, বাঙালি জাতি ভাষা আন্দোলনের সময় থেকে নিজেদেরকে ঐতিহ্য ও মননে পাকিস্তানি জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা মনে করতে শুরু করে। বাঙালি সাধারন জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তি সংগ্রামের মহান চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করে। তাই আমাদের সংবিধানের ৯নং অনুচ্ছেদে বলা হয়, “ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছিলেন সেই বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি তবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি”। বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতির মূলে রয়েছে ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির অভিন্নতা। বাঙালিরা একটি স্বতন্ত্র জাতি। এ জাতীয়তাবাদের উপর ভিত্তি করেই ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে তারা বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বস্তুত আমরা বাঙালি, বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। আমরা একটি স্বতন্ত্র, স্বাধীন জাতি। এ স্বাতন্ত্র্যবোধ ও স্বকীয়তাই আমাদেরকে এক সুদৃঢ় ঐক্যে ঐক্যবদ্ধ করেছে।
২. সমাজতন্ত্র (Socialism): বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের এবং আমাদের মহান সংবিধানের অপর একটি মূলনীতি হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক বিধিবিধানের উপস্থিতি। বাংলাদেশে একটি শোষণমুক্ত এবং সাম্যবাদী সমাজব্যবস্থা নিশ্চিতভাবে প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করা হবে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা নয়। আমাদের সংবিধানের ১০নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে যে, মানুষের উপর মানুষের শোষণের অবসান করে ন্যায়ানুগ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে শোষণহীন সমাজব্যবস্থা কায়েম করা হবে। সমাজতন্ত্রের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সংবিধানে উল্লেখ করা হয় যে, রাষ্ট্র তার প্রয়োজনে যেকোন ধরনের সম্পত্তিকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীনে গ্রহণ করতে পারবে। সংবিধানে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, মেহনতি মানুষকে সকল প্রকার শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। রাষ্ট্রের উৎপাদন ও বণ্টন ব্যবস্থার মালিক হবে জনগণ তথা রাষ্ট্র। আইনের ধারা আরোপিত সীমার মধ্যে ব্যক্তিগত মালিকানার বিধানও রাখা হয়।
৩. গণতন্ত্র (Democracy): বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে গণতন্ত্র এবং স্বৈরশাসনের অবসান। আমাদের সংবিধানের ১১নং অনুচ্ছেদে এর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে, “প্রজাতন্ত্র হবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে; মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হবে”। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রনৈতিক ব্যবস্থা হবে গণতান্ত্রিক। প্রাপ্তবয়স্কদের সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নাগরিকগণ রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারবে। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামাজিক বৈষম্য দূর করাই হবে গণতন্ত্রের লক্ষ্য। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে গণতন্ত্র রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন ব্যবস্থার একটি পরিপূর্ণ রূপ নির্দেশ করবে। গণতন্ত্র শুধু শাসনব্যবস্থার রূপ নির্দেশ করবে না, সামাজিক আদর্শ হিসেবেও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। রাষ্ট্র পরিচালনার সকল স্তরে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা সকল কর্মকাণ্ড পরি

No comments:

Post a Comment