FB LIke Bottom

Friday, October 30, 2015

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলাকে না জানিয়েই স্থানীয় সাংসদের তালবাগের বাসভবনে প্রস্তুতিমূলক সভার আহ্বান

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলাকে না জানিয়েই স্থানীয় সাংসদের তালবাগের বাসভবনে প্রস্তুতিমূলক সভার আহ্বান ॥ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলী হায়দারকে পেটালো দলীয় নেতা-কর্মীরা
সাভার: সাভারে দলীয় সভা চলার সময় সভা আহ্বানের বৈধতাকে কেন্দ্র করে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হায়দার। এসময় দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে স্থানীয় সাংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমানের তালবাগস্থ বাসভবনে ২ নভেম্বর দলের কেন্দ্রীয় মহাসমাবেশে লোক সমাগম নিয়ে আয়োজিত দলের প্রস্তুতি কমিটির সভার বৈধতা নিয়ে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে অনুষ্ঠিত সভা পন্ড হয়ে যায়। সভায় উপস্থিত একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ইতিপূর্বে নিজ সিদ্ধান্তে নেওয়া কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারনে সাংসদ এনামুর রহমান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলাসহ দলের অধিকাংশ নেতার সাথে মতানৈক্য তৈরী হয় আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সাংসদ মুরাদ জংয়ের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত আলী হায়দার। এ নিয়ে দলের বিভিন্নস্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। চলতি বছরের আগষ্টের দলীয় কর্মসূচীতে নিজের অনুসারীদের অংশ না নেওয়ার জন্য বলে দেওয়ার খবর প্রচার হলে ক্ষোভের মাত্রা চরমে পৌছে। সম্প্রতি ২রা নভেম্বর দলীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলাকে না জানিয়েই স্থানীয় সাংসদের তালবাগের বাসভবনে প্রস্তুতিমূলক সভার আহ্বান করেন দলের সাধারন সম্পাদক আলী হায়দার। এসময় তিনি বেশ কয়েকজন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকে তিরস্কার করেন এ সভায় উপস্থিত থাকার কারনে। সভা চলাকালে এক পর্যায়ে সাংসদের বক্তব্যের পর আলী হায়দার মাইক্রোফোন হাতে নিলে তার কাছে থেকে দলের উপজেলা কমিটি’র যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মাইক্রোফোন চেয়ে নিয়ে সভাপতিকে না জানিয়ে সভা আহ্বানের পাশাপাশি দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকান্ডে নিষ্ক্রিয় এবং সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় এ সভা আহবানে আলী হায়দারের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর পর পরই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তার উপর চড়াও হয়। কিল, ঘুষি এবং চেয়ার ছোাড়ে লাঞ্ছিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলী হায়দারকে। এতে তার মাথা, হাত এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত যখম হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এসময় সাংসদের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে তিনি পুলিশের সহায়তায় বাইরে বেরিয়ে আসেন। এদিকে দলীয় সভায় সংঘর্ষের খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আলী হায়দার দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দলের সাভার উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। গেলো ডিসেম্বরের কাউন্সিলে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়নি এখনো। এছাড়াও চলতি বছরের ১৫আগষ্টের কর্মসূচীতে নিজের অনুসারীদের অংশ না নেওয়ার নির্দেশেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে-এমনটাই অভিযোগ করেন দলের কয়েকজন নেতা। আলী হায়দার বলেন, সাংসদ ডা.এনামুর রহমানের পরামর্শে তারই তালবাগের বাসভবনে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভা ডেকে দলের ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের উপস্থিত থাকার আমন্ত্রন জানান তিনি। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার উপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়। তাকে দলীয় পদ থেকে অপসারনের অংশ হিসেবেই এ হামলার বহিঃপ্রকাশ বলে তিনি মনে করেন। তার উপর হামলার পর দলীয় সভা পন্ড হয়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দলের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতির অনুমতি নিয়ে সভা আহ্বানের কথা থাকলেও তা মানা হয় নি, তাই এ সভা আহ্বাানের বৈধতা নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলা সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আমার অনুমতি নিয়ে সভা আহ্বান করার কথা থাকলেও আমাকে কোন কিছু না জানিয়েই এ সভার আয়োজন করা হয়, তারপরও স্থানীয় সাংসদের অনুরোধে আমি এ সভায় অংশ নিয়েছিলাম। তবে সাধারন নেতা-কর্মীরা তা সহজভাবে নেয়নি। হামলার বিষয়ে সাভারের সাংসদ ডা. এনামুর রহমান জানান, নিয়মতান্ত্রিকভাবে সভা আহ্বান না করায় সভা নিয়ে কিছুটা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে চেয়ার ছুড়োছুড়ি করে বলেও জানান তিনি। তবে হামলার পর দলীয় নেতা-কর্মীদের মাঝে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। কোনঠাসা হয়ে পড়েছে হায়দার অনুসারীরা।

No comments:

Post a Comment