চিকিৎসার অভাবে শিশু বিপাশা মৃত্যুপথযাত্রী
ছার, আল্লাহর দুনিয়াত কী কাহো নাই
মোর ছাওয়াটাক বাঁছেবার?
মোঃ মহিবুল্লাহ্ আকাশ, স্টাফ করেসপন্ডেন্টঃ ছার, আল্লাহর দুনিয়াত কী কাহো নাই মোর ছাওয়াটাক বাঁছেবার? হামরা গরিব বলিয়া হামার ছাওয়াটা কী বিনা চিকিস্সায় মরি যাইবে ছার... হৃদয় বিদারক কান্নাজড়িত কন্ঠে এমন আকুতি জানালেন মৃত্যুপথযাত্রী শিশু বিপাশা’র মা মোর্শেদা। সাড়ে ছ’বছর বয়সী বিপাশা এক বছর আগে গাছ থেকে পড়ে বাঁশের সূঁচে বিদ্ধ হয়েছিল। আর্থিক অনাটনের সংসারে সঠিক চিকিৎসা না মেলায় গোটা শরীরে বিভৎস ঘা দেখা দিয়েছে। তাকে বাঁচাতে বাবার ভ্যান, মায়ের বিয়ের গহনা, বাড়ির গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সবই বিক্রি করা হয়েছে। বিপাশা বাঁচতে চায়, সহপাঠিদের সাথে আবারও স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু অসহায় বাবা-মা’র পক্ষে তার চিকিৎসা খরচ যোগার করা অসম্ভব। তাই নিষ্পাপ শিশুটিকে বাঁচাতে সকলের কাছে আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের কুঠিরঘাট এলাকার ভ্যানচালক মোঃ বেলাল হোসেনের শিশুকন্যা বিপাশা গত বছরের ২১ মার্চ বাড়ির পাশে ছোট একটি বড়ই গাছে উঠেছিল। হঠাৎ পা ফস্কে পড়ে যায় গাছের নিচে রাখা বাঁশের সূঁচালো বেড়ায়। মেরুদন্ড বিদ্ধ হয় বিপাশার। তাৎক্ষণিক নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে। তিনদিন পর তাকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে সুচিকিৎসা মেলেনি তার। এলাকাবাসীর দান-খয়রাত ও সংসারের সবকিছু বিক্রির টাকায় ৩৩ দিন পর অপারেশন করা হয় বিপাশাকে। পিঠ থেকে অপসারণ করা হয় দেড় ইঞ্চি আকারের বাঁশের ধারালো সূঁচ।
কিন্তু অপারেশনের ঘা শুকাতে না শুকাতে কোমর থেকে পায়ের হাঁটু পর্যন্ত অংসখ্য ঘা দেখা দিয়েছে বিপাশার শরীরে। দারিদ্রপীড়িত সংসারে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সুচিকিৎসার অভাবে বিপাশার গায়ের ওই ঘাগুলো বিভৎস আকার ধারণ করছে। ঘা’এর মুখ দিয়ে শরীরের হাড় দেখা যাচ্ছে। তার মল ত্যাগ করার অংশে পচন ধরেছে। বোধহীন হয়ে গেছে শিশু বিপাশার কোমল পা দু’টি। আদরের মেয়েকে বাঁচাতে পরণের কাপড় ছাড়া কোন কিছুই নেই ভ্যানচালক বেলাল ও তার স্ত্রী মোর্শেদার কাছে। বিপাশার বাবা ভ্যানচালক বেলাল চোখ মুছতে মুছতে এই প্রতিবেদক-কে বললেন, ছার, বাচ্চাটাকে বাচানোর জন্য আপনার বাড়িতে গোলামী করতে হলেও করবো । তারপরও আমার বাচ্চাটা কে বাঁচান ছার ।
এদিকে বিপাশার ব্যাপারে কথা বললে কাশিরাম বেলপুকুর ইউপি’র চেয়ারম্যান এনামুল চৌধুরী জানান, আমি ৮০০ টাকা দিয়েছি । ভবিষ্যতে বাচ্চাটিকে বাঁচাতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, আমার এলাকায় শত-শত রোগী, আর সাহায্য করা সম্ভব না ।
বিপাশার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎস্যা করানো হলে তাকে বাচাঁনো সম্ভব । খুব তাড়াতাড়ি সেটা না করা হলে মেয়েটির কোমড় থেকে পা পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে । তখন তার বাচাঁর আশা হবে খুবই ক্ষীণ। চিকিৎসার জন্য কত টাকা খরচ হবে জানতে চাইলে তারা বলেন, খুব কম করে হলেও ৪লক্ষ টাকা লাগবে।
প্রিয় পাঠক, চিকিৎসার অভাবে ৪লক্ষ টাকার জন্য একটি নিষ্পাপ প্রাণ কি অকালে ঝরে যাবে? ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে কি দুই হাজার করে টাকা দেয়ার মত ২০০ জন মানুষ নেই? আসুন না, একটাবার চেষ্টা করে দেখি । আমরা চেষ্টা না করলে বিপাশা কি মানবতাকে কখনও ক্ষমা করবে?
আরও বিস্তারিত তথ্য ও সহায়তার জন্য যোগাযোগ- মোঃ মহিবুল্লাহ্ আকাশ
মোবাইলঃ ০১৮১৫-৩০১৩০২
FB LIke Bottom
Friday, April 1, 2016
চিকিৎসার অভাবে শিশু বিপাশা মৃত্যুপথযাত্রী
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment