FB LIke Bottom

Sunday, January 17, 2016

সরকারের দুই বছর এবং আজকের বাংলাদেশ বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত।

সরকারের দুই বছর এবং আজকের বাংলাদেশ
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত।
বর্তমান সরকারের দুই বছর পূর্তি হয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী আবার বুঝতে পারছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতির সোপানে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রীও ঠিক এ কথাটিই বললেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। উন্নয়নে বিশ্বে রোল মডেল। দেশ এখন উন্নয়নের ঐতিহাসিক দিকসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।’ দল-মত ও বিভক্তির ঊর্ধ্বে উঠে এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত। বিশ্বব্যাংক যখন কোনো বাস্তবভিত্তিক ও যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উত্তর ছিল—‘বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে।’ ২০১২ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে জননেত্রী শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেন। এরপর তিনি ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া গোলচত্বরে ৭ নম্বর পিলারের পাইলিংয়ের কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে মূল সেতুর নির্মাণকাজের সূচনা করেন। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের এক-চতুর্থাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নের এটি একটি অনন্য জ্বলন্ত উদাহরণ।
সামাজিক ও মানব উন্নয়নের অনেক সূচকেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ বিশ্বের অনেক ব্যক্তি ও সংস্থা বাংলাদেশের এই অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে দেশে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, সহিংসতা শুরু করেছিল। ওই সময় ২৩১ জন আগুনে পুড়ে নিহত এবং এক হাজার ১৮০ জন পেট্রলবোমায় আহত হয়েছিল। এ ছাড়া দুই হাজার ৯০৩টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ১৮টি রেলগাড়ি ও আটটি লঞ্চে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশের মানুষ সমর্থন করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ কর্তৃক ২০১৬ সালের বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফলে দেখা যাচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দেশ চীনকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।
পেট্রলবোমা হামলা, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র প্রভৃতি দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারার মূল কারণ হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করতে পারা।
এ সময় দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে ২০১৫ সালে দাঁড়িয়েছে ২২.৪ শতাংশে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০.৭ বছরে। নবজাতক শিশু মৃত্যুর হার কমে দাঁড়িয়েছে হাজারে মাত্র ৩০ জনে। ১৯৫ কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে। ১০ বছরে ৩৮.৭ শতাংশ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী কর্মসংস্থান ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১৩৫.৭৬ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে। ১৪,০৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। বর্তমানে রপ্তানি আয় ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রেমিট্যান্স উন্নীত হয়েছে ১৬.৪৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ ১৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩৮.৩৫ মেট্রিক টন খাদ্য উত্পাদিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-দক্ষিণ এশিয়ার হিসাব হচ্ছে, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে শীর্ষে বাংলাদেশ।
শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ৪০টি দেশে, ৫৪টি মিশনে আট হাজার ৪২০ জন শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার। বিশ্বের ১০০ জন শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩তম মর্যাদাপূর্ণ স্থান লাভ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ পুরস্কার লাভ করেছেন। গ্যালাপ সার্ভে অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ নিরাপদতম দেশ। এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে।
সিঙ্গাপুরের সফলতা বিংশ শতাব্দীর কাহিনী। কিন্তু বাংলাদেশের কাহিনী মূলত একবিংশ শতাব্দীর। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাড়ে তিন বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করতে পেরেছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর থেকে পাকিস্তানি ভাবধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছিল। স্বাধীনতা লাভের পর প্রায় ৪৫ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অনুযায়ী মাত্র ১৫ বছর ছয় মাস বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে

No comments:

Post a Comment