ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শোক ।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ গত শনিবার মস্তিষ্কের রক্তক্ষরনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন । ( ইন্নাইলাহি ওয়া ইন্নাইলাহি রাজেউন ) । তার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. মো: সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মো: আব্দুস সামাদ আজাদ এক গভীর শোক প্রকাশ করেন । নেতৃবৃন্দ শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন ও দোয়া করেন মরহুমকে যেন আল্লাহু তা'আলা বেহেস্থ নসিব করেন ।
FB LIke Bottom
Saturday, January 23, 2016
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের শোক ।
Friday, January 22, 2016
নৌকার জন্য ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা সিলেটের জনসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নৌকার জন্য ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা
সিলেটের জনসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নৌকায় শান্তি দেবে। নৌকা সমৃদ্ধি দেবে। নৌকা উন্নতি দেবে। নৌকায় এ দেশের মুক্তি এনে দেবে।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তবে কোন নির্বাচনের জন্য তিনি ভোট চেয়েছেন, তা উল্লেখ করেননি। চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই নির্বাচন এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে হওয়ার কথা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় সিলেটে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। বক্তৃতায় উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে দেশের স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই আজকে দেশের উন্নতি হচ্ছে। আগামী দিনেও নৌকা মার্কাকে কখনো ভুলবেন না। নৌকায় আগামীতে ভোট দেবেন তো। হাত তুলে দেখান। হাত তুলে ওয়াদা করেন। হাত তুলে ওয়াদা করেন যে, নৌকায় ভোট দেবেন।’ এরপর উপস্থিত জনতা হাত তুলে তাঁকে দেখান।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের যখন উন্নতি হয়। মানুষ যখন শান্তিতে থাকে। আমরা দেখি একজনের মনে খুব অশান্তি দেখা দেয়। তিনি আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারেন। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেন। তাঁদের হাতে কোনো মানুষই নিরাপদ থাকে না। তাঁদের মনে শুধু শান্তি নাই। আর সবাই শান্তিতে বসবাস করছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের স্থান হবে না। আপনারা সজাগ থাকবেন। আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, কোনো ছেলে-মেয়ে ওই সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদীদের কাছে যেন যেতে না পারে। তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এই স্বাধীনতা অর্থবহ করতে চাই।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নতি হয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এ দেশের স্বাধীনতা এনেছে। আর উড়ে এসে জুড়ে বসে ক্ষমতায় আসে। তারা আসে লুটপাট করতে, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ করতে। তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’
জনসভা শুরুর আগে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠেই বিভিন্ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচনের আনুষ্ঠানিকতা সারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুষ্ঠানে তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইসিটি ভবন, আবুল মাল আবদুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স, জৈন্তাপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, সিলেট এপিবিএনের ব্যারাক ভবন, সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানা ভবন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নির্মিত হোস্টেল ভবন, ৩০ শয্যাবিশিষ্ট খাদিমপাড়া হাসপাতাল, সিলেট সদর এমসি কলেজের মাঠের সীমানাপ্রাচীর ও গেট, সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালটি ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালে রূপান্তর, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের ফলক উন্মোচন করেন।
এ ছাড়া সিলেট আউটার স্টেডিয়াম, খসরুপুর বাজার জিসি-পৈলানপুর-বালাগঞ্জ জিসি সড়ক উন্নয়ন, হরিপুর জিসি-গাছবাড়ী জিসি সড়ক উন্নয়ন (কানাইঘাট অংশ), মৈয়াখালী বাজার-আর অ্যান্ড সুইচ (বারোহাল ইউপি অফিস) ভায়া হাটুবিল মাদ্রাসা সড়ক উন্নয়ন, নারী পুলিশ ডরমেটরি ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ, শাহপরান থানা ভবন নির্মাণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা অফিস নির্মাণ, সিলেট বিভাগীয় ও জেলা এনএসআই কার্যালয় ভবন নির্মাণ, তামাবিল স্থলবন্দর নির্মাণ, হজরত গাজী বোরহান উদ্দিন (র.) মাজার তিনতলা ভিত্তিবিশিষ্ট মসজিদ, মহিলা ইবাদতখানা ও সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিলেট বিভাগ এবং সিভিল সার্জন, সিলেট কার্যালয় ভবন নির্মাণকাজ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সিলেট ইলেকট্রনিক সিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজরত শাহজালাল (র.)-এর মাজার এবং হজরত শাহ পরান (র.)-এর মাজার শরিফ জিয়ারত করেন।
Sunday, January 17, 2016
সরকারের দুই বছর এবং আজকের বাংলাদেশ বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত।
সরকারের দুই বছর এবং আজকের বাংলাদেশ
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত।
বর্তমান সরকারের দুই বছর পূর্তি হয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী আবার বুঝতে পারছে যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতির সোপানে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে। দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রীও ঠিক এ কথাটিই বললেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেন, ‘বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। উন্নয়নে বিশ্বে রোল মডেল। দেশ এখন উন্নয়নের ঐতিহাসিক দিকসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে।’ দল-মত ও বিভক্তির ঊর্ধ্বে উঠে এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের যথার্থতা ও অপরিহার্যতা প্রমাণিত। বিশ্বব্যাংক যখন কোনো বাস্তবভিত্তিক ও যুক্তিসংগত কারণ ছাড়াই পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উত্তর ছিল—‘বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে।’ ২০১২ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে জননেত্রী শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেন। এরপর তিনি ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া গোলচত্বরে ৭ নম্বর পিলারের পাইলিংয়ের কাজ উদ্বোধনের মাধ্যমে মূল সেতুর নির্মাণকাজের সূচনা করেন। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের এক-চতুর্থাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার ঘোষণা এবং তা বাস্তবায়নের এটি একটি অনন্য জ্বলন্ত উদাহরণ।
সামাজিক ও মানব উন্নয়নের অনেক সূচকেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনসহ বিশ্বের অনেক ব্যক্তি ও সংস্থা বাংলাদেশের এই অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে দেশে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, সহিংসতা শুরু করেছিল। ওই সময় ২৩১ জন আগুনে পুড়ে নিহত এবং এক হাজার ১৮০ জন পেট্রলবোমায় আহত হয়েছিল। এ ছাড়া দুই হাজার ৯০৩টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ১৮টি রেলগাড়ি ও আটটি লঞ্চে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশের মানুষ সমর্থন করেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান ব্লুমবার্গ কর্তৃক ২০১৬ সালের বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফলে দেখা যাচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দেশ চীনকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।
পেট্রলবোমা হামলা, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র প্রভৃতি দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারার মূল কারণ হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করতে পারা।
এ সময় দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে ২০১৫ সালে দাঁড়িয়েছে ২২.৪ শতাংশে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০.৭ বছরে। নবজাতক শিশু মৃত্যুর হার কমে দাঁড়িয়েছে হাজারে মাত্র ৩০ জনে। ১৯৫ কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে। ১০ বছরে ৩৮.৭ শতাংশ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। নারী কর্মসংস্থান ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১৩৫.৭৬ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি হয়েছে। ১৪,০৭৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। দেশের ৭৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। বর্তমানে রপ্তানি আয় ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রেমিট্যান্স উন্নীত হয়েছে ১৬.৪৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ ১৮.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৩৮.৩৫ মেট্রিক টন খাদ্য উত্পাদিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-দক্ষিণ এশিয়ার হিসাব হচ্ছে, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে শীর্ষে বাংলাদেশ।
শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ ৪০টি দেশে, ৫৪টি মিশনে আট হাজার ৪২০ জন শান্তিরক্ষী পাঠিয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এক হাজার ৩১৪ মার্কিন ডলার। বিশ্বের ১০০ জন শ্রেষ্ঠ চিন্তাবিদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩তম মর্যাদাপূর্ণ স্থান লাভ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ পুরস্কার লাভ করেছেন। গ্যালাপ সার্ভে অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ নিরাপদতম দেশ। এসব উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে।
সিঙ্গাপুরের সফলতা বিংশ শতাব্দীর কাহিনী। কিন্তু বাংলাদেশের কাহিনী মূলত একবিংশ শতাব্দীর। কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সাড়ে তিন বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করতে পেরেছিল। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর থেকে পাকিস্তানি ভাবধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিচালিত হচ্ছিল। স্বাধীনতা লাভের পর প্রায় ৪৫ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ অনুযায়ী মাত্র ১৫ বছর ছয় মাস বাংলাদেশ পরিচালিত হয়েছে
কুয়েতে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা কুয়েতে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে।
কুয়েতে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা
কুয়েতে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে।দেশটির সরকার স্থানীয় মিডিয়ায় এ খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ হয়।অবৈধরা জরিমানা দিয়ে কুয়েত ত্যাগ করতে পারবে,রেসিডেন্সি লঙ্ঘনকারীদের জন্য (অ্যামনেস্টি) সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা শিরোনামে প্রকাশিত হয় স্থানীয় দৈনিকে।সংবাদে পাবলিক রিলেশন ও সিকিউরিটি বিভাগে দায়িত্বরত ব্রিগেডিয়ার আদেল আল হাসহাস প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ঘোষণা দেন।
রিপোটে আরও বলা হয়,কুয়েত ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কালো তালিকাভুক্ত অপরাধী ছাড়া যে সকল প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে তারা প্রতিদিনের জন্য ২ দিনার জরিমানা দিয়ে দূতাবাস থেকে আউটপাস সংগ্রহ করে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে বিনা বাধায় কুয়েত ত্যাগ করতে পারবেন।অন্যদিকে যারা কয়েক বছর ভিসা নবায়ন না করে কুয়েতে অবৈধ হয়ে রয়েছেন তারা এককালীন ৬০০ কুয়েতি দিনার জরিমানা দিয়ে কুয়েত ত্যাগ করতে পারবেন।রেসিডেন্সি লঙ্ঘনকারী যারা কুয়েত ত্যাগ করবে তারা পুনরায় নতুন ভিসা নিয়ে কুয়েতে আসতে পারবেন। এই সুযোগটি গ্রহণে কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
কুয়েতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) আবদুল লতিফ খান জানান, তারাও স্থানীয় মিডিয়াতে অ্যামনেস্টি ঘোষণার খবর পড়েছেন কিন্তু অফিসিয়াল কোন কাগজপত্র পাননি।তবে তারা বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করছেন খবরটির সত্যতার বিষয়ে। অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য তারা এই সুযোগটি গ্রহণে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
দূতালয় প্রধান কাউন্সিলর এসএম মাহবুবুল আলম বলেন, যদি স্থানীয় আইনে অবৈধ প্রবাসীদের জরিমানা দিয়ে বৈধভাবে নতুন করে ইকামা লাগানো যায় সে বিষয়েও বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করছেন।দূতাবাসের প্রচারণায় এই সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্যের জন্য ৫৫৪৮৪৩৯৩, ৯৯৫৩৬৭৪৩, ৯৪৪২৯৭৪৪, ৯৯৪৬৭৫৫৩৮ হেল্প লাইন নম্বরসমূহে যোগাযোগ করতে পারবেন। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ বর্তমান অবস্থায় স্থানীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কোন প্রকার জনসমাগম পার্টি থেকে বিরত থাকাসহ সব সময় বৈধ কাগজ পত্র সাথে রাখার আহ্বান করেন।
আলো আর ছায়ার নৃতে্য, সরে যায় সময়
আলো আর ছায়ার নৃতে্য, সরে যায় সময়
রোদেলার আঁচলে মাথা পেতে কাটে প্রহর
মেঘের আড়ি পেতে থাকা বাসনা প্রণয়
নারীর পায়ে পায়ে এঁকে চলে পথ - ঘাসরেখা
তখনও শিরীষ বনে, হিজলের মন্ত্র মায়ায় |
চারদিকে শুকনো পাতার শিস, ভ্রমরের গুঞ্জন
ঘাঙশালিক ভুলেছে পথ, পথের ইতিকথা
ঘাসের উপর প্রজাপতি, মাঠে মাঠে ঘাস
আমি নিরব, শান্ত, শতকালের দ্বারের প্রহরী
আকাশজুড়ে নীলিমার ভস্ম, পড়ে থাকে মানচিত্রে |
Tuesday, January 12, 2016
বিরল ভালোবাসা’র দিনলিপি ঢাকার শ্যামলীতে রাস্তার পাশে তুমুল ঝগড়া হচ্ছে। লোকজন জড়ো হয়ে গেছে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কানে এলো—ঝগড়ার মাঝে উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার নাম।
বিরল ভালোবাসা’র দিনলিপি
ঢাকার শ্যামলীতে রাস্তার পাশে তুমুল ঝগড়া হচ্ছে। লোকজন জড়ো হয়ে গেছে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কানে এলো—ঝগড়ার মাঝে উচ্চারিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার নাম। থমকে দাঁড়ালাম। দেখি ছেঁড়া ময়লা শাড়ি পরা এক বৃদ্ধা আর লুঙ্গি পরা এক যুবক শ্যামলী ২ নম্বর রোডের কাজি অফিসের রাস্তার পাশে ঝগড়ায় ব্যস্ত। কিছুক্ষণ ঝগড়া শোনার পর একপর্যায়ে যুবককে উদ্দেশ করে বললাম, ‘আপনারা ঝগড়া করছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনা আপনাদের কী ক্ষতি করল?’ ঝাঁজালো জবাব দিয়ে দ্রুত চলে গেলেন যুবক।
জানতে পারলাম, বৃদ্ধার নাম রমিজা খাতুন আর যুবকটি আব্দুল কাদির। তাঁরা মা-ছেলে। ছেলে চলে যাওয়ার পর রমিজা ওখানে দাঁড়িয়েই কাঁদতে থাকেন। জড়ো হওয়া কয়েকজন জানালেন, রমিজার স্বামী হাসমত আলী ছেলের নামে জমি না রেখে শেখ হাসিনার নামে রেখেছেন বলে ছেলে কাদির মাকে ভাত-কাপড় দেয় না।
চমকে উঠলাম। শেখ হাসিনার নামে জমি রেখেছেন মানে! বিদ্যুচ্চমকের মতো মাথায় খেলল সাংবাদিকতার সূত্র। ‘শেখ হাসিনার নামে যে জমি রেখেছেন তার কোনো প্রমাণ আছে কি?’
বৃৃদ্ধা রমিজা কোমরে গুঁজে রাখা একটা দলিলের কপি বের করে দেখালেন। দেখি দলিলের গ্রহীতার স্থানে লেখা : ‘শেখ হাসিনা, পতি-ওয়াজেদ আলী, সুধা সদন, ধানমণ্ডি, ঢাকা’।
পেয়ে গেলাম নিউজের রত্ন। রমিজা খাতুনকে বললাম, ‘চলুন, আপনার বাসায় গিয়ে কথা বলি।’ রমিজা বললেন, ‘বাবা, আমি খামু কী? ভিক্ষা না করলে তো পেটের ভাত জুটব না।’ বললাম, ‘ভিক্ষা করে দিনে কত পান?’ রমিজা জানালেন, ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। পকেট থেকে ২০০ টাকা বের করে তাঁর হাতে দিয়ে বললাম, ‘আপনার বাসায় চলেন, আজ আর ভিক্ষা করতে হবে না।’
বস্তির ছোট্ট খুপরি ঘরটিতে গিয়ে বসে গল্প জুড়ে দিই রমিজার সঙ্গে। সব জেনেবুঝে হতবাক হয়ে যাই। রমিজার স্বামী হাসমত আলী রিকশাভ্যান চালিয়ে তিলে তিলে জমানো টাকা দিয়ে নিজের নামে নয়, একমাত্র সন্তান আব্দুল কাদির কিংবা স্ত্রী রমিজা খাতুনের নামেও নয়, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একখণ্ড জমি কিনে রেখে গেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ‘এতিম’ শেখ হাসিনার নামে!
গফরগাঁওয়ের সেই গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর বানিয়ে দেওয়া বাড়ির সামনে রমিজা খাতুন
২০১০ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি ভালোবাসার এমন বিরল ঘটনা জেনে আমার দিশাহারা অবস্থা। কাউকে কিছু বললাম না; ছুটলাম গফরগাঁওয়ে। সেখানকার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে খোঁজ নিলাম শেখ হাসিনার নামে করা দলিলটির নম্বর আর মূল ভলিউমের দলিলের নম্বর ঠিক আছে কি না। ২০০ টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে একজনকে খোঁজ নিতে পাঠাই। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে এসে এক কর্মকর্তা জানালেন, হ্যাঁ, সব ঠিক আছে। ৫০০ টাকার বিনিময়ে তুলে নিলাম দলিলের একটি সার্টিফায়েড কপি। সেই কপি হাতে নিয়ে ছুটলাম হাসমত আলীর কেনা জমিতে। পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে, সব কিছু জেনে চলে এলাম ঢাকায়। প্রতিদিনই একটু করে লিখতে থাকলাম। প্রায় দুই মাস পর ২০১০ সালের ২ জুন কালের কণ্ঠে প্রধান প্রতিবেদন হিসেবে ‘বিরল ভালোবাসা’ শিরোনামে ছাপা হলো সেই খবর।
বঙ্গবন্ধু অন্তপ্রাণ গফরগাঁওয়ের ভ্যানচালক হাসমত আলী শুধু মিছিল-মিটিংয়ে ছুটে বেড়িয়েই ক্ষান্ত ছিলেন না; ১৯৭৫-এর হত্যাযজ্ঞের পর বঙ্গবন্ধুর ‘এতিম’ মেয়েদের নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েন। সারা জীবনের জমানো টাকা দিয়ে গফরগাঁওয়ের রাওনা ইউনিয়নের খারুয়া বড়াইল গ্রামে সাত শতক জমি কেনেন শেখ হাসিনার নামে। শেষ জীবনে এসে ভয়ানক ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করে টাকার অভাবে বিনা চিকিত্সায় মারা গেছেন হাসমত, তবু বেচেননি ‘মেয়ে হাসিনার’ নামে কেনা জমিটি। হাসমত আলী মারা যাওয়ার আগে জমির দলিলটি স্ত্রী রমিজা খাতুনের হাতে তুলে দিয়ে বলে যান, যে করেই হোক দলিলটি যেন শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়।
স্বামীর মৃত্যুর পর রমিজা অথই সাগরে পড়ে যান। শেষ পর্যন্ত ভিক্ষার থালা তুলে নেন হাতে। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির চারপাশে ভিক্ষা করেন আর স্বামীর রেখে যাওয়া জমির দলিলটি শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠে না।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিরল ভালোবাসার এই প্রতিবেদন সারা দেশে আলোড়ন তোলে। সেদিন খুব ভোর থেকে আমার মোবাইলে একের পর এক ফোন আসতে থাকে, মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। কেউ রমিজার দায়িত্ব নিতে চান, কেউ সহযোগিতা করতে চান।
স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আবেগাপ্লুত হন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর বিশেষ সহকারী সেলিমা খাতুন (তত্কালীন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২) রমিজা খাতুনের খোঁজ নেন এবং রমিজা ও আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলবেন বলে জানান।
প্রতিবেদন প্রকাশের পরদিন ৩ জুন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবশেষে শেখ হাসিনার দেখা পেলেন রমিজা খাতুন। রমিজাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী। ঘোষণা দিলেন, হাসমত আলীর কেনা জমিটি রমিজা খাতুনের নামে লিখে দেবেন, সেখানে একটি বাড়ি বানিয়ে দেবেন আর রমিজার পুরো জীবনে
Monday, January 11, 2016
তিন তরুণের একি নিষ্ঠুরতা চাকরি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরার মনস্থির করছিলেন তিন তরুণ।
তিন তরুণের একি নিষ্ঠুরতা
চাকরি ছেড়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরার মনস্থির করছিলেন তিন তরুণ। তিনজনের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দার ঘোড়াগাঁওয়ে। তবে তাদের কারও হাতেই বাসভাড়া ছিল না। তাই তিন তরুণ ঠিক করলেন, বাস ভাড়া নেই তো কী হয়েছে; বাড়ি ফিরবেন প্রাইভেটকারে। আর চালককে ভাড়া না মিটিয়ে হত্যা করে কৌশলে পালিয়ে যাবেন। নির্মম এই ঘটনা ঘটিয়েছেন আজহারুল ইসলাম (১৯), মোফাজ্জল হোসেন (২০) ও মাসুদ রানা নামের তিন তরুণ। পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে প্রাইভেটকারে বাড়ি ফিরে চালক মো. জাহাঙ্গীরকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেন তারা। বাঁশঝাড়ের মধ্যে লাশ লুকিয়ে রেখে চলে যান। আর প্রাইভেটকারটি (ঢাকা মেট্রো-খ-১১-১৩৫১) ফেলে রাখলেন কংস নদের তীরে। এর পর স্বাভাবিক জীবনও শুরু করলেন তারা।
তবে অপরাধী যে কোনো না কোনো সূত্র রেখে যায়। আর সেই সামান্য সূত্র ধরেই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লোমহর্ষক এই হত্যার সঙ্গে জড়িত চক্রটিকে শনাক্ত করেছে। আজহারুল ও মোফাজ্জলকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তারা হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত বর্ণনা করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আজহারুলের চাচাতো ভাই শাহীন। এখন পুলিশ খুঁজছে মাসুদ রানাকে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি (পূর্ব) মাহবুব আলম সমকালকে বলেন, পাঁচ হাজার টাকার কারণে একই গ্রামের তিন তরুণ প্রাইভেটকার চালককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। চালক নিজে প্রাইভেটকারটির মালিক ছিলেন। গাড়িটি চালিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন।
হত্যার সঙ্গে জড়িত দু'জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর মাসুদ রানার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে মৌসুমী ফ্যাশনে মাসে চার হাজার ১০০ টাকা বেতনে তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন আজহারুল ও মোফাজ্জল। মাসুদ একই এলাকায় আগে থেকে পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তবে চাকরি পাওয়ার একদিন পরই তা ছেড়ে দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আজহারুল ও মোফাজ্জল। বাড়ি যাওয়ার খরচ হাতে না থাকায় তিন তরুণ মিলে একজন সিএনজি চালকের মাধ্যমে প্রাইভেটকার ভাড়া করেন। গত ২ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সবুজবাগের বাসিন্দা কারচালক জাহাঙ্গীর নারায়ণগঞ্জের তারাব এলাকা থেকে আজহারুল, মোফাজ্জল ও রানাকে নিজের গাড়িতে তোলেন।
ভোররাতে তারা নেত্রকোনার পূর্বধলা থানাধীন হুগলা ইউনিয়নের জামিয়াকান্দা গ্রামে পেঁৗছার পর তিন তরুণ চালককে গাড়ি থামানোর অনুরোধ করেন। গাড়ি চালানো বন্ধ করার পরপর চালকের পেছনে আসনে বসা মাসুদ রানা প্রথমে রশি দিয়ে জাহাঙ্গীরের গলায় ফাঁস দেন। এর পর তার দুই সহযোগী গলা চেপে ধরেন। চালকের মৃত্যু নিশ্চিত হলে রাতের অন্ধকারে ঘটনাস্থলের অদূরে একটি বাঁশঝাড়ের মধ্যে লাশটি ফেলে দেন। মাসুদ রানা প্রাইভেটকার চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত সাত কিলোমিটার দূরে কংস নদের তীরে নিয়ে ফেলে রাখেন। এর পর ওই রাতে আজহারুল পাশের এলাকার বাসিন্দা তার চাচাতো ভাই শাহীনকে ফোনকে করে দেড়শ' টাকা ঋণ নেন। তিন বন্ধু ফেরেন নিজ নিজ বাড়িতে। ঘটনার কয়েক দিন পর মাসুদ ঢাকায় ফিরে এলেও আজহারুল ও মোফাজ্জল গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করেন। ৭ ডিসেম্বর অর্ধগলিত অবস্থায় জামিয়াকান্দা গ্রাম থেকে একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘদিন পরও পরিচয় শনাক্ত করতে না পারায় ওই মরদেহ অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীর বাড়ি ফিরে না আসায় ও মোবাইল ফোনসেট বন্ধ থাকায় তার স্ত্রী শিখা বেগম রাজধানীর সবুজবাগ থানায় জিডি করেন। ওই জিডির সূত্র ধরে তদন্ত করে ডিবি। এর পর মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে প্রথমে সন্দেহভাজন হিসেবে নেত্রকোনা থেকে আটক করা হয় আজহারুলের চাচাতো ভাই শাহীনকে। শাহীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার মধ্য দিয়ে অপর তিনজনের নাম বেরিয়ে আসে। শাহীন জানান, ওই রাতে আজহারুল, মোফাজ্জল ও মাসুদ রানা তার সঙ্গে দেখা করে দেড়শ' টাকা নিয়েছিলেন। এর পর ১৮ ডিসেম্বর আজহারুল ও মোফাজ্জলকে গ্রেফতার করা হলে তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের খিলগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার ইকবাল হোসেন সমকালকে বলেন, যে কারণে একজন চালককে হত্যা করা হয়েছে, সেটা অচিন্তনীয় ব্যাপার। জাহাঙ্গীর নিখোঁজের ঘটনায় প্রথমে সবুজবাগ থানায় যে জিডি হয়েছিল, তা এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়েছে। এখন মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি।
ডিবির পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীরের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গাড়ি ছিনতাইয়ের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কারণ, চালককে হত্যার পর গাড়িটি তারা কংস নদের পাড়ে অসীম কুমার সিংহের বাড়ির পাশে খালি জায়গায় রেখে দেয়। দু'জনকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। ভাড়ার পাঁচ হাজার টাকা না দিয়ে চালককে মারধর করেও তিন তরুণ পালাতে পারত।