কালের নটরাজ' ও কবি কামরুল ইসলাম...
বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী এই কবি তাঁর কবিতা, গান ও কথার সমন্বয়ে সৃজন করেছেন, 'কালের নটরাজ'খানি ! ৭০ পৃষ্ঠার ছোট্ট পরিসর কিন্তু ক্যানভাস হিসেবে 'কালের নটরাজ' বিশাল।
কামরুল ইসলাম শুধু ভাল কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গান লেখেন তা-ই নয়, তিনি তুখোড় বক্তাও। আর মন্চে দাঁড়িয়ে অকপটে অনর্গল অনল বর্ষানোর জন্য একজন মানুষকে পঠনপাঠনেও হতে হয় সুঅভ্যস্থ এবং চলমান সময়যানের চোখ-কান খোলা অতন্দ্রযাত্রী।
'কালের নটরাজ' সেই সব সুঅভ্যাসের স্বাক্ষরই জাহির করছে তার স্রষ্টা কামরুল ইসলামের পক্ষে।
নটরাজকে পাঠকের বোধে গ্রন্থিত করে দিতে টিকাভাষ্যসহ যে উপাত্তগুলো উপস্থাপণ করেছেন কামরুল, এটা খুব শ্রমসাধ্য বিষয়।
'কালের নটরাজ' সব পাঠকের বিষয় নয়। তবে যে কেউ কষ্ট করে এর থেকে রস নিংড়ে আহরণ করতে পারলে তার ভাণ্ডারে কিছু বাড়তি মাত্রা যুক্ত হবেই । আর শিল্প- সাহিতে্যর মানুষেরা 'কালের নটরাজ' অধ্যয়ণের পর এর প্রতিফলন দেখতে পাবেন নিজের সৃষ্টিতে। কারণ এতে শুধু জীবনবোধই নেই, লেখককে ধর্ণা দিতে হয়েছে বহু প্রকণের দ্বারে।
'কালের নটরাজ'কে প্রথম দেখার স্মৃতিটুকুও যুক্ত করি যদি, সেদিনের ঝড়ে ছত্রখান বাংলা একাডেমি যখন সবক'টি গেট বন্ধ করে দিয়ে ভেজা কাকের মতো একা একা গা ঝেড়ে পরিপাটি হওয়ার চেষ্টা করছিলো, বন্ধ গেটের এপারে সারিবদ্ধ মানুষেরা 'কালের নটরাজ' হাতে তার লেখককে এগিয়ে আসতে দেখে কিছুটা এলোমেলো হয়ে গেলো। ক্যামেরার মানুষেরা ছেঁকে ধরলেন কবিকে। ভীড়ের ভেতর মাথা গলিয়ে বিষয়টা বুঝে উঠে বললাম, কামরুল, অবস্থা এই তবে? এই ঝড় তোমার কালের নটরাজই সাথে করে এনেছে। সদানন্দ কবি কামরুল ইসলাম তাঁর মতো করেই উজ্জ্বল হাসিতে উত্তর দিলেন, 'মনে তো হচ্ছে, তাই বুবু !'
তিন মার্চ কবি কামরুল ইসলামের জন্মদিন। তাই 'কালের নটরাজ' শুধু একটি বই আলোচলা হিসাবে সীমাব্ধ থাকলো না। এর ভেতর মিশে গেলো 'কালের নটরাজ'র স্রষ্টার প্রতি কিছুটা বাৎসল্য! কারণ,
আমার জন্মের ১৭ দিন পর আমার সাড়েতিন বছরের ভাইটি মারা যায়। এতে অপয়া ভেবে আমার মা আমাকে ঘর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। বড় হতে হতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি শুনতে শুনতে কামরুল নামের মানুষ দেখলে আমি সরে পালাই। কারণ, আমার সেই ভাইটির নাম ছিলো কামরুল। এই গল্প শুনে কবি কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, 'কিন্তু বুবু, আমার থেকে তো তোমার পালানো হবে না...!' হয়তো পালানোর সূত্র যেখানে গ্রন্থিত, টানের উৎসও সেখানে লুকানো। তাই লেখাটুকু হয়ে গেলো দুইরৈখিক।
তিন মার্চ জন্মদিনে আগাম শুভেচ্ছা কামরুল। তোমার সবাইকে নিয়ে সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন হোক। মহৎ উদ্দেশ্যগুলো পূর্ণ হোক সবই এবং তুমি হয়ে ওঠো তোমার বিশ্বাসেরই মতো...
'আমি মহাকালের নটরাজ
ভূমি থেকে উত্থিত শিবের অগ্নিবাণ, দ্রোহী শুদ্র চণ্ডাল
আফ্রিকার লুমুম্বা, স্পার্টাকাস, রাসার লেলিন
আমিই সৌর্যসাধক, বীরত্ব আমার নাম
কালের মহিমায়, মহানিনাদের নৈপুণে্য
প্রেম ও শক্তির প্রদীপ জ্বালাই।'
FB LIke Bottom
Monday, February 29, 2016
কালের নটরাজ' ও কবি কামরুল ইসলাম...
Wednesday, February 3, 2016
জাতিসংঘের সামনে একুশের ভাস্কর্য উন্মোচন ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে স্থাপন করা হয়েছে ‘একুশের ভাস্কর্য’।
জাতিসংঘের সামনে একুশের ভাস্কর্য উন্মোচন
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে স্থাপন করা হয়েছে ‘একুশের ভাস্কর্য’।
দাগ হ্যামারশোল্ড প্লাজায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।
এসময় গাওয়া হয় মহান একুশের অমর সঙ্গীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’।
আগের বছরগুলোয় শুধু ২১ ফ্রেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও এবার পুরো ফেব্রুয়ারিজুড়ে এটি সেখানে থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাসুদ বিন মোমেন ভবিষ্যতে নিউ ইয়র্কে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনে নিজের আগ্রহের কথা জানান।
তিনি বলেন, “এর আগে আমি জাপানে দায়িত্ব পালনকালে প্রবাসীদের সহায়তায় টোকিওতে স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনে সক্ষম হয়েছি। নিউ ইয়র্কেও স্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপনে আপনাদের সবার আন্তরিক সহায়তা চাই।
“২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পাওয়ায় জাতিসংঘের সামনে স্থায়ী একটি শহীদ মিনারের দাবি আজ সার্বজনীনতা পেয়েছে। তাই তা অপূর্ণ থাকবে বলে মনে করি না।”
নিউ ইয়র্কের ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাঙালির চেতনামঞ্চ’ এর উদ্যোগে ১৯৯২ সাল থেকে জাতিসংঘের সামনে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে অস্থায়ী শহীদ মিনার স্থাপন করে প্রবাসী বাঙালিরা শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন।
তাদের উদ্যোগেই স্থাপিত এবারের ভাস্কর্যটির নকশা করেছেন অলম্পিকি স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিল্পী খুরশীদ সেলিম। আর এটি নির্মাণ করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান শিল্পী মৃণাল হক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নিউ ইয়র্ক গভর্নরের প্রতিনিধি হার্শ কে পারেখ, সিটি কম্পট্রোলারের প্রতিনিধি আলেয়া লতিফ, নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব জামালউদ্দিন হোসেন প্রমুখ।
প্রবাসী বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছিলেন অনুষ্ঠানে।
ত্যাগীরাই টিকিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগকে: শেখ হাসিনা বাধা কাটিয়ে উঠে আসার জন্য আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ত্যাগীরাই টিকিয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগকে: শেখ হাসিনা
বাধা কাটিয়ে উঠে আসার জন্য আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদেরই কৃতিত্ব দিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সদ্য প্রয়াত দুই নেতার স্মরণে এক সভায় তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের উপর অনেক আঘাত এসেছে। এই ত্যাগী নেতাদের জন্য কেউ আওয়ামী লীগের ক্ষতি করতে পারেনি।”
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাঙার চেষ্টার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “শুধু ক্ষমতাসীন সরকার নয়, দলের মধ্যে থেকেও বিভিন্ন সময়ে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। এই পুরনো লোকদের জন্যই দলের কিছু হয়নি।”
ঢাকা মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ এবং সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নুরুল ইসলাম স্মরণে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিটিউশনে এই সভার আয়োজন করে।
তিন যুগ ধরে বাংলাদেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব দিয়ে আসা শেখ হাসিনা তার ২০ মিনিটের বক্তব্যের পুরোটাজুড়েই এম এ আজিজ এবং নুরুল ইসলামকে স্মরণ করেন।
নুরুল ইসলামকে স্মরণ করে তিনি বলেন, “উনাকে নুরুল ইসলাম চাচা বলেই জানতাম। সারাক্ষণ আওয়ামী লীগের প্রচার করত, আওয়ামী লীগের জন্য উনি বহুবার গ্রেপ্তার হয়েছেন।”
ঢাকার নেতা আজিজকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “সবার প্রিয় আজিজ ভাই, আমিও উনাকে আজিজ ভাই বলে জানতাম।”
“ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ হওয়ার নয়”
গত ২৩ জানুয়ারি মস্তিস্কের রক্তক্ষরণে মারা যান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজ। পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান এলাকার এই বাসিন্দা জীবনের পুরোটা সময় আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন।
তার বাবা পুরান ঢাকার বিলুপ্ত পঞ্চায়েতের নেতা পেয়ারু সরদার ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় প্রথম শহীদ মিনার তৈরিতে সহায়তা করেছিলেন।
আজিজের পরিবারের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতিটি সময়ে ছাত্র বা রাজনৈতিক কর্মীদের পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জায়গা ওই হোসনী দালান।”
১৯৭০-এর নির্বাচনেও এম এ আজিজের পরিবারের অবদানের কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
রাজনৈতিক কর্মসূচি সফলে আজিজের অবদান তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “কোনো বড় অনুষ্ঠান বা কনফারেন্স হলে মঞ্চ থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া তাদের (এম এ আজিজের পরিবার) ওখান থেকে হত। টাকা যা জোগাড় করতাম, তা উনার হাতে তুলে দিতাম।”
“একাশি সালে দেশে ফেরার পর আজিজ ভাইয়ের পরিবারের কাছ থেকে স্নেহ-ভালোবাসা পেয়েছি।”
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের মৃত্যুর পর ২০০৭ সালে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি গঠনের সময় আজিজকেই সভাপতি হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
“আমি সাহারা আপার (সাহারা খাতুন) মাধ্যমে জিল্লুর রহমানে কাছে আজিজ ভাইয়ের নাম পাঠাই।”
“আমরা ঢাকা মহানগরের দক্ষিণ ও উত্তরের কমিটি করে রেখেছিলাম। দক্ষিণের সভাপতি করেছিলাম আজিজ ভাইকে। এত ব্যস্ত ছিলাম। ওই ঘোষণা দিতে পারলাম না,” বলেন শেখ হাসিনা।
হানিফের মৃত্যুর পর থেকে ঢাকা মহানগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন আজিজ। মাঝে সম্মেলন হলেও নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আজিজ ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বেই পালন করে যাচ্ছিলেন।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি কামাল আহমেদ মজুমদারের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, খাদ্যমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এম এ আজিজের ছেলে কাউন্সিলর ওমর বিন আজিজ তামিমও বক্তব্য করেন।
Tuesday, February 2, 2016
স্বাগত জানাই সরকারের এই সিদ্ধান্তে নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন সাকা-মুজাহিদের সন্তানরা
স্বাগত জানাই সরকারের এই সিদ্ধান্তে
নাগরিকত্ব হারাচ্ছেন সাকা-মুজাহিদের সন্তানরা
সম্প্রতি বাংলাদেশে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো যুদ্ধাপরাধীর বিচার। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান,আলী আহসান মুজাহিদ,সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী রায় ঘোষণা ও কার্যকর করেছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, সহায়তাকারী এমনকি তাদের সন্তানেরাও বাংলাদেশের নাগরিক হতে অযোগ্য হবেন। এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন-২০১৬ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খসড়াটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য সোমবার নিয়মিত বৈঠকের কার্যসূচিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে আলোচ্য আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে এখানে জন্মগ্রহণকারীদের জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক বলে বিবেচনা করা হয়েছে।
আইনের খসড়ায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আনুগত্য প্রকাশ করলে, বিদেশি রাষ্ট্রের কোনো বাহিনীতে যোগদান করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা অন্য কোনোভাবে উক্ত বাহিনীকে সহায়তা করলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক থাকতে বা হতে পারবেন না। এছাড়া কেউ বিদেশি কোনো সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনী বা অন্য কোনো বিশেষ বাহিনীতে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা বাংলাদেশের অস্তিত্ব অস্বীকার ও দেশ বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তাদের সন্তানেরাও বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার অযোগ্য হবেন।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা প্রবাসীদের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়ার বিধান রেখে বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন করা হচ্ছে। সংসদ সদস্য, সাংবিধানিক পদধারী এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্তরাও দ্বৈত নাগরিক হতে পারবেন না। মিথ্য তথ্য দিয়ে নাগরিক হলে তা বাতিলসহ মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। অভিবাসীদেরও নাগরিক করার ক্ষেত্র রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে আইন কার্যকর হওয়া পর্যন্ত সময়ে এই আইনের অধীন কোনো অপরাধ কেউ করলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন। এ বিবেচনায় যদি এ সময়ের মধ্যে কেউ মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে সে ক্ষেত্রেও আইনটি প্রযোজ্য হবে।
এ দিকে গতকাল রবিবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক জানান, মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
আইনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তি, যদি তার পিতা বা মাতা এই আইনের শুরুতে বা পরে অথবা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ হতে এই আইন বলবত্ হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উক্ত ব্যক্তির জন্মকালে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন তাহলে তিনি জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হবেন। তবে কোনো ব্যক্তির পিতা বা মাতা কেবল বংশসূত্রে বাংলাদেশি হওয়ার কারণে উক্ত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হবেন না যদি বাংলাদেশ কনস্যুলেট বা দূতাবাসে তার জন্মের এক বছর অথবা এই আইন বলবত্ হওয়ার এক বছরের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন না করেন। অথবা তার মাতা বা পিতা তার জন্মকালে বাংলাদেশ সরকারের অধীনে চাকরিরত না থাকেন। এবং এ আইন বলবত্ হওয়ার অব্যবহিত পূর্বপর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করেন, এমন কোনো দেশের নাগরিক বা অধিবাসী যে রাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল বা আছে, বাংলাদেশে বেআইনি অভিবাসী হিসেবে বসবাস করেন বা করে থাকেন। এছাড়া কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করলে তার নাবালক সন্তান এ আইনের অধীনে নাগরিকত্ব লাভের অযোগ্য হবেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে নাগরিকত্ব প্রদান, নাগরিকত্ব বাতিলসহ প্রাসঙ্গিক বিষয় সুস্পষ্ট করার জন্য ‘দ্য বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ (টেম্পোরারি প্রভিশনস) অর্ডার ১৯৭২ বলবত্ রয়েছে। ‘দ্য সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট ১৯৫১’-এর অধীনে ওই আদেশ জারি করা হয়। বহিরাগমন, নাগরিকত্ব অর্জন, সংরক্ষণ, পরিত্যাগ, অবসান ইত্যাদি বিষয়ের সমাধান দেয়া এই দুই আইনে পরিষ্কার নয়। তাই দুই আইন একীভূত করে ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন ২০১৬-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে বিদেশি নাগরিককে তার সামাজিক, বিজ্ঞান, সাহিত্য, বিশ্বশান্তির, মানব উন্নয়ন, সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বিশেষ যোগ্যতা বা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা যাবে। তবে তারা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে জড়িত, এমপি, স্থানীয় সরকারসহ কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এর বাইরেও কোনো বিদেশি নাগরিককে বাংলাদেশ হতে নাগরিকত্ব দেয়া হলেও তারাও কোনো রাজতৈনিক সংগঠনে জড়িত হতে এমপি, স্থানীয় সরকারসহ কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
প্রস্তাবিত খস
Monday, February 1, 2016
শহীদের সংখ্যা কমালে যেখানে শুধুইমাত্র পাকিস্তানের লাভ এবং বাংলাদেশের ক্ষতি সেখানে বাংলাদেশরই রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তাদের নেতারা হঠাৎ করে কেন আমাদের অমর বীর শহীদদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে উন্মাদ হয়ে গিয়েছে?
কারন কি?
জিয়াউর রহমান সবসময় ৩০ লাখ শহীদের কথা বলে গিয়েছেন,এমনকি খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে বা বিরোধী দলে থাকতেও বহু বহুবার ৩০ লক্ষ শহীদের কথায় মেনে এসেছে এবং বলে এসেছে।
শহীদের সংখ্যা কমালে যেখানে শুধুইমাত্র পাকিস্তানের লাভ এবং বাংলাদেশের ক্ষতি সেখানে বাংলাদেশরই রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তাদের নেতারা হঠাৎ করে কেন আমাদের অমর বীর শহীদদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে উন্মাদ হয়ে গিয়েছে?
নিচের আলোচনার মাধ্যমে আমি এই প্রশ্নের উত্তর বিশ্লেষন করতে চেষ্টা করবো,তার আগে আমি বিএনপি নেতাদের এবং বিএনপি সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।এই ধন্যবাদের কারনও নিচের আলোচনাতে উঠে আসবে।
* পাকিস্তানের সুপ্রীমকোর্টে আজগর খানের দায়ের করা মামলায় দেশটির সাবেক সেনাপ্রধান আসলাম বেগ২০১২ সালের ২ মার্চ হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টিলিজেন্স (আইএসআই) ২১ বছর আগে(১৯৯১সালে) বিএনপির নির্বাচনী তহবিলে ৫ কোটি রুপী দিয়েছে।খবরটি দুবাইয়ের শক্ত সংবাদ মাধ্যম খালিজ টাইমসে তথ্যসহ প্রকাশিত হয়।
*তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের জুন মাসে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে চারদলীয় জোট সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর পাকিস্তানের কাছ থেকে বিএনপির ১শ’ কোটি টাকা নেয়ার কথা জানান। তিনি জানান, বিএনপি জন্য কুয়েত ও সৌদি আরবের কাছ থেকে আরো ২শ’ কোটি টাকা এনে দেয় পাকিস্তান,অর্থাৎ বিএনপিকে পাকিস্তান মোট ৩০০ কোটি টাকা দেয়। ২০০৭ সালের ডেইলি স্টার পত্রিকায় তথ্যটি প্রকাশিত হয়।
* ৭ই' জুন ২০০৭,বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর স্বীকার করেন মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহীমের সঙ্গে তারেক রহমানের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে বিগত ১০ বছর যাবত,এবং তাদের মাঝে বেশ কয়েকবার গোপন বৈঠকও হয়েছে।এমনকি বাবরের সাথেও দাউদ ইব্রাহিমের ভালো সম্পর্ক রয়েছে অস্ত্র হেরোইন ব্যবসার সুত্র ধরে। এই প্রতিবেদনটি তখন ইত্তেফাকসহ অনেক পত্রিকায় আসে।
*লন্ডন থেকে ঢাকা, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় করা তারেকের যাবতীয় ফোন কলের রেকর্ডের সুত্র ধরে সমস্ত নাম্বার যাচায় বাছায় করে ভারতে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছে,পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসএস এর মাধ্যমে আমাদের উপমহাদেশের শীর্ষ ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে তারেক রহমানের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।ভারতীয় গোয়েন্দাস সংস্থা নিশ্চিত তথ্যবহুল প্রতিবেদনটি সম্পন্ন করে ১৬/২/২০১৩ তারিখে তৎকালিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর হাতে তুলে দেন।তারপর বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করেন।প্রতিবেদনটি তখন কলকাতার আনন্দবাজারসহ এদেশে প্রায় সব সংবাদ মাধ্যমে আসে।
এগুলি হলো প্রকাশিত তথ্য,তার মানে এবার বুঝুন গোপন অবস্থা আরো কতটা ভয়াবহ!
এবার আসুন সহজ হিসাবে,পাকিস্তান বিএনপিকে এমন অঢেল অর্থ সাহায্য জঙ্গি সাহায্যসহ সবকিছু করছে এমনি এমনি? না অবশ্যই না।তারা বিএনপির কাছ থেকে এর কয়েকগুণ বেশি ফিরে পেতেই এভাবে সাহায্য করছে।বিশেষ করে বিএনপিকে এদেশের ক্ষমতায় এনে এদেশের স্বাধীনতা চেতনা জর্জরতি করতে, ভারত বিরোধী ভয়ংকর তৎপরতা চালাতেই পাকিস্তান বিএনপিকে জন্ম দিয়েছিল,এবং জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত তাদের ইচ্ছেমতোই বিএনপিকে পরিচালনা করছে তা আজ তথ্যসহ প্রমানিত।
কিন্তু সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ সরকারের যুদ্ধাপরাধী বিচারের সফলতা দেখে পাকিস্তান সরকার প্রচন্ডভাবে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।বহুদিন থেকে সারা বিশ্বে এ সত্য প্রকাশিত হয়েছে যে, এশিয়া আরব ভিত্তিক যে সকল জঙ্গি আজ বিশ্বময় নরক সৃষ্টি করে চলেছে সেইসকল জঙ্গিদের প্রধান সৃষ্টিকর্তা জঙ্গিরাষ্ট্র পাকিস্তান। এখন পাকিস্তানের প্রধান রপ্তানী পণ্যের নাম এখন 'জঙ্গি',এবং বিশ্ব জুড়ে ঠিক এই চাপে আছে পাকিস্তান।তারপর বাংলাদেশ থেকে দাবী উঠতে শুরু করেছে ৭১ এর পাকিস্তানের সেই ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী বিচার করার,পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার,পাকিস্তানের ক্ষতিপুরন দেয়া বাংলাদেশের।এখন আমাদের এই যৌক্তিক দাবীগুলির সাথে যদি বিশ্বশক্তি সমর্থন প্রদান করে তাহলে রাষ্ট্রগত পাকিস্তানের ধ্বংসের কফিনে শেষ পেরেক পোতা হবে।
ঠিক এই কারনে এই বিষয়গুলিকে বিতর্কিত এবং হালকা করতে পাকিস্তান এখন তুমুল চাপ প্রয়োগ করছে বিএনপিকে।এবং বিএনপি তা করতে বাধ্য,কারন বিএনপির গোটা অস্তিত্ব পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীল।ধরুন, এখন পাকিস্তানের নির্দেশ অমান্য করবে বিএনপি,ঠিক তার কিছু মুহুর্তের মধ্যে তারেক রহমানের লাশ ফেলে দেবে জঙ্গিরা বা মাফিয়া এজেন্ট থেকে,এবং বিএনপির জন্ম পাকিস্তানের হাতে পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষার জন্য সেটা খোদ পাকিস্তান থেকেই প্রকাশ করা হবে তখন।এটাই চরম বাস্তবতা।
বিএনপি নেতাদের এত দেশবিরোধী অপতৎপরতার পরেও এদেশের একজন বিএনপি সমর্থক এগুলির প্রতিবাদ করলোনা।আর এটাই প্রমান করে যে,আপনাকে বিএনপির নেতা বা সমর্থক হতে হলে অবশ্যই প্রথমে আপনাকে দেশবিরোধী হতে হবে এবং এটাই মূল যোগ্যতা।বিএনপির কেউ আমার এই কথার প্রতিবাদ করার আগে আপনি আপন